
বাংলা উচ্চারণের নিয়ম: এইচএসসি পরীক্ষা, বাংলা দ্বিতীয় পত্র
			বাংলা উচ্চারণের নিয়ম | 
		
বাংলায় এ+ নিশ্চিত করতে আজই সংগ্রহ কর:
মুসা স্যারের ‘বাংলা ১ম পত্র ও ২য় পত্রের সাজেশন ও সমাধান’
প্রশ্ন ১: প্রমিত বাংলায় আদ্য অ' উচ্চারণের ৫টি নিয়ম লেখ। অথবা, স্বরধ্বনি উচ্চারণের ৫টি নিয়ম লেখ।
উত্তর: নিচে স্বরধ্বনি উচ্চারণের নিয়ম আলোচনা করা হলো:
অথবা, নিচে আদ্য ‘অ’ উচ্চারণের নিয়ম আলোচনা করা হলো:
১। সাধারণত স্বাধীন অ-কার বা ব্যঞ্জনে-যুক্ত অ-কারের পরবর্তী অক্ষরে ই বা উ ধ্বনি থাকলে, উক্ত অ-কার ও-কারের মতো উচ্চারিত হয়।
যেমন: অতি (ওতি), অধিকার (ওধিকার্), নদী (নোদি), গরু ( গোরু ), অনুকুল (ওনুকুল্)।
(ব্যতিক্রম যেখানে নেতিবাচক বা না-অর্থে অ-কার থাকে এবং সহ বা সাথে অর্থে স যুক্ত হয়, সেখানে পরে ই বা উ থাকলেও অ-কারের উচ্চারণ ও কারের মতো হয় না। যেমন: অবিনাশ (অবিনাশ্), সবিনয় (শবিনয়্ )।
২। অ-কারের পর য-ফলা থাকলে অ-কার ও-কারের মতো উচ্চারিত হয়। যেমন: সত্য ( শোত্তো), অধ্যক্ষ (ওদ্ধোক্খো), গদ্য ( গোদ্দো), ধন্য ( ধোন্নো)।
(ব্যতিক্রম : তবে, অ-কারের পর যুক্তব্যঞ্জন বর্ণে য-ফলা থাকলে অ-কার ও ও-কারের মতো উচ্চারিত হয় না। যেমন:অন্ত্য (অন্তো), মর্ত্য (মর্তো), অর্ঘ্য (অর্ঘো), কণ্ঠ্য (কন্ঠো)।
৩। অ-কারের পরে ক্ষ থাকলে অ-কার ও-কার রূপে উচ্চারিত হয়। যেমন: অক্ষ (ওক্খো), অক্ষাংশ (ওক্খাঙ্শো), ভক্ষণ ( ভোক্খোন্ )।
৪। অ-কারের পরে জ্ঞ থাকলে অ-কার ও-কার রূপে উচ্চারিত হয়। যেমন: যজ্ঞ ( জোগ্গোঁ )।
ব্যতিক্রম: তবে, অ-কার না-বোধক অর্থে ব্যবহৃত হলে, অ-কার ও-কার রূপে উচ্চারিত হয় না। যেমন: অজ্ঞ (অগ্গোঁ)।
৫। শব্দের আদিতে অ-কার এবং তারপরে ঋ-কার যুক্ত ব্যঞ্জনবর্ণ থাকলে অ-কার সাধারণত ও-কারের মতো উচ্চারিত হয়। যেমন: মসৃণ
(মোস্সৃন্), কর্তৃকারক ( কোর্তৃকারোক্ ), যকৃৎ ( জোক্কৃত্ )।
৬। শব্দের আদিতে অ-যুক্ত র-ফলা থাকলে উক্ত অ-এর উচ্চারণ ও-কারের মতো হয়। যেমন: শ্ৰম ( স্রোম্ ), শ্রবণ ( স্রোবোন্ ), স্রষ্টা স্রোশ্টা)।
৭। যে সব রেফ-যুক্ত শব্দের বানানে রেফ-এর পরে য-ফলা ছিল, বর্তমানে য-ফলা ব্যবহৃত হয় না, সে সব শব্দের আদ্য এবং মধ্য-অ সাধারণত ও-কারের মতো উচ্চারিত হয়। যেমন: পর্যন্ত (পোর্জোন্তো) <পৰ্য্যন্ত, মর্যাদা ( মোর্জাদা ) <মৰ্য্যাদা, সৌন্দর্য ( শোউন্দোর্জো ) <সৌন্দর্য্য।
৮। বাংলা সাধুরীতিতে ব্যবহৃত শব্দ কিংবা ক্রিয়াপদের বানানে ই-কার আছে, কিন্তু চলিত রীতিতে সে ই-কার অনেক ক্ষেত্রে বিলুপ্ত হলেও তার
পূর্ববর্তী অ-কার সাধারণত ও-কারের ন্যায় উচ্চারিত হয়। যেমন: রবিবার > রোববার (রোব্বার্), বলিয়াছিল > বলেছিল ( বোলেছিলো),
হইল > হল ( হোলো )।
৯। একাক্ষর শব্দের আদি-স্থিত ব্যঞ্জনে-যুক্ত অ-কারের পরে দন্ত্য-ন থাকলে, কখনো কখনো অ-কারের উচ্চারণ ও-কারের মতো হয়। যেমন:বন ( বোন্ ), মন ( মোন্ ) , জন ( জোন্ )।
১০। সম উপসর্গযোগে গঠিত শব্দের আদ্য-অ সংস্কৃতানুসারী উচ্চারণে অবিকৃত অ রূপে উচ্চারিত হলেও বাংলা উচ্চারণে কোন কোন ক্ষেত্রে সে অ-কার ও-কারের মতো উচ্চারিত হয়। যেমন: সন্ন্যাস ( শোন্নাশ্), সমীকরণ ( শোমিকরোন্), সঞ্চিত ( শোন্চিতো)।
প্রশ্ন ২ : ‘অ’ ধ্বনি উচ্চারণের ৫টি নিয়ম উদাহরণসহ লেখ। (রাবো, মবো-২৩,ঢা.বো. ১৬, ২২, দিবো-১৭, ঢাবো-১৭, যবো-১৭, ববো-১৭)
অথবা, অ-এর উচ্চারণ কোন কোন স্থানে ও-এর মতো বা ও-বৎ হয়। অথবা, স্বরধ্বনি উচ্চারণের ৫টি নিয়ম লিখ।
অথবা, বাংলা ‘অ’ ধ্বনি উচ্চারণের যে কোনো ৫টি নিয়ম উদাহরণসহ লেখ। (কুবো, চ.বো. ১৬)
উত্তর : অ-এর উচ্চারণ নিম্নলিখিত স্থানে ও-এর মতো হয় ; অথবা, নিচে স্বরধ্বনি উচ্চারণের নিয়ম লেখা হলো:
১। সাধারণত স্বাধীন অ-কার বা ব্যঞ্জনে-যুক্ত অ-কারের পরবর্তী অক্ষরে ই বা উ ধ্বনি থাকলে, উক্ত অ-কার ও-কারের মতো উচ্চারিত হয়।
যেমন: অতি (ওতি), অধিকার (ওধিকার্), নদী (নোদি), গরু ( গোরু ), অনুকুল (ওনুকুল্)।
২। অ-কারের পর য-ফলা থাকলে অ-কার ও-কারের মতো উচ্চারিত হয়। যেমন: সত্য ( শোত্তো), অধ্যক্ষ (ওদ্ধোক্খো), গদ্য ( গোদ্দো), ধন্য (ধোন্নো)।
৩। অ-কারের পরে ক্ষ থাকলে অ-কার ও-কার রূপে উচ্চারিত হয়। যেমন: অক্ষ (ওক্খো), অক্ষাংশ (ওক্খাঙ্শো), ভক্ষণ ( ভোক্খোন্ )।
৪। অ-কারের পরে জ্ঞ থাকলে অ-কার ও-কার রূপে উচ্চারিত হয়। যেমন: যজ্ঞ ( জোগ্গোঁ )।
৫। শব্দের আদিতে অ-কার এবং তারপরে ঋ-কার যুক্ত ব্যঞ্জনবর্ণ থাকলে অ-কার সাধারণত ও-কারের মতো উচ্চারিত হয়। যেমন: মসৃণ
(মোস্সৃন্), কর্তৃকারক ( কোর্তৃকারোক্ ), যকৃৎ ( জোক্কৃত্ )।
৬। শব্দের আদিতে অ-যুক্ত র-ফলা থাকলে উক্ত অ-এর উচ্চারণ ও-কারের মতো হয়। যেমন: শ্ৰম ( স্রোম্), শ্রবণ ( স্রোবোন্ ), স্রষ্টা স্রোশ্টা)।
৭। যে সব রেফ-যুক্ত শব্দের বানানে রেফ-এর পরে য-ফলা ছিল, বর্তমানে য-ফলা ব্যবহৃত হয় না, সে সব শব্দের আদ্য এবং মধ্য-অ সাধারণত ও-কারের মতো উচ্চারিত হয়। যেমন: পর্যন্ত (পোর্জোন্তো) <পৰ্য্যন্ত, মর্যাদা ( মোর্জাদা ) <মৰ্য্যাদা, সৌন্দর্য ( শোউন্দোর্জো ) <সৌন্দর্য্য।
৮। বাংলা সাধুরীতিতে ব্যবহৃত শব্দ কিংবা ক্রিয়াপদের বানানে ই-কার আছে, কিন্তু চলিত রীতিতে সে ই-কার অনেক ক্ষেত্রে বিলুপ্ত হলেও তার
পূর্ববর্তী অ-কার সাধারণত ও-কারের ন্যায় উচ্চারিত হয়। যেমন: রবিবার > রোববার (রোব্বার্), বলিয়াছিল > বলেছিল ( বোলেছিলো),
হইল > হল ( হোলো )।
৯। একাক্ষর শব্দের আদি-স্থিত ব্যঞ্জনে-যুক্ত অ-কারের পরে দন্ত্য-ন থাকলে, কখনো কখনো অ-কারের উচ্চারণ ও-কারের মতো হয়। যেমন:বন (বোন্ ), মন ( মোন্ ) , জন ( জোন্ )।
১০। সম উপসর্গযোগে গঠিত শব্দের আদ্য-অ সংস্কৃতানুসারী উচ্চারণে অবিকৃত অ রূপে উচ্চারিত হলেও বাংলা উচ্চারণে কোন কোন ক্ষেত্রে সে অ-কার ও-কারের মতো উচ্চারিত হয়। যেমন: সন্ন্যাস ( শোন্নাশ্), সমীকরণ ( শোমিকরোন্), সঞ্চিত ( শোন্চিতো)।
(ব্যাপক আলোচনার জন্য দশটি নিয়ম দেওয়া হয়েছে, পরীক্ষায় লিখতে হবে ৫টি নিয়ম)
প্রশ্ন ৩: ব-ফলা উচ্চারণের ৫টি নিয়ম লেখ। (যবো, ববো-২৩, দি. বো, ২০১৯, রা বো -২২, কুবো-২২, সিবো-২২)
উত্তর: নিচে ব-ফলা উচ্চারণের ৫টি নিয়ম আলোচনা করা হলো:
১। শব্দের আদিতে যুক্ত ব্যঞ্জনের ব-ফলা সাধারণত উচ্চারিত হয় না। যেমন : স্বদেশ (শদেশ্), ত্বক (তক্), ধ্বনি ( ধোনি) ইত্যাদি।
২। শব্দের মধ্যে বা অন্তে সংযুক্ত ব্যঞ্জনের সঙ্গে ব-ফলা যুক্ত থাকলে ঐ ব-ফলা উচ্চারিত হয় না। যেমন : সান্ত্বনা (শান্তোনা), উচ্ছ্বাস
(উচ্ছাশ্ ), উজ্জ্বল (উজ্জল্) ইত্যাদি।
৩। শব্দের মধ্যে বা অন্তে ব-ফলা যুক্ত ব্যঞ্জন থাকলে ব্যঞ্জনটির উচ্চারণ দ্বিত্ব হয়। যেমন : বিশ্বাস ( বিশ্শাশ্ ), বিদ্বান ( বিদ্দান্ ), রাজত্ব
(রাজত্তো), অশ্ব (অশ্শো)।।
৪। উৎ উপসর্গযোগে গঠিত শব্দের ত্ (দ)-এর সঙ্গে যুক্ত ব-ফলার ব অবিকৃতভাবে উচ্চারিত হয়। যেমন : উদ্বোধন (উদ্বোধোন্), উদ্বাস্তু
(উদ্বাস্তু), উদ্বাহু ( উদ্বাহু ), উদ্বেগ ( উদ্বেগ্ ) ইত্যাদি।
৫। বাংলা শব্দে সন্ধির ফলে ক থেকে আগত গ-এর সঙ্গে ব-ফলা যুক্ত হলে, ঐ ব-এর উচ্চারণ অবিকৃত থাকে। যেমন : দিগ্বিদিক (দিগবিদিক),
দিগ্বিজয় (দিগ্বিজয়্), ঋগ্বেদ (রিগ্বেদ্), দিগ্বলয় (দিগ্বলয়্) ইত্যাদি।
৬। ম-এর সঙ্গে ব-ফলা যুক্ত হলে, সে ব উচ্চারিত হয়। যেমন : লম্বা (লম্বা), সম্বল (শম্বল্/শম্বোল্), শম্বুক ( শোম্বুক্ )।
প্রশ্ন ৪: ম-ফলা উচ্চারণের ৫টি নিয়ম লেখ।
উত্তর: নিচে ম-ফলা উচ্চারণের নিয়ম আলোচনা করা হলো:
১। শব্দের আদিতে ব্যঞ্জনে যুক্ত ম-ফলা থাকলে, সে ‘ম’ উচ্চারিত হয় না । তবে ম-ফলা যুক্ত ব্যঞ্জনে যে স্বরধ্বনি থাকে, তা সানুনাসিক উচারিত হয় যেমন: শ্মশান (শঁশান্), স্মারক (শাঁরোক্), স্মরণ (শঁরোন্), স্মৃতি (সৃঁতি) ইত্যাদি।
২। শব্দের মধ্যে বা অন্তে ম-ফলা-যুক্ত ব্যঞ্জনের ম উচ্চারিত হয় না, ব্যঞ্জনটির উচ্চারণ দ্বিত্ব ঘটে এবং ব্যঞ্জনে যুক্ত স্বরটির উচ্চারণ আনুনাসিক
হয়। যেমন: ভস্ম (ভশশোঁ), রশ্মি ( রোশ্শিঁ), আত্মা ( আত্তাঁ), পদ্ম (পদ্দোঁ) ইত্যাদি।
৩। শব্দের মধ্যে বা অন্তে ‘গ, ঙ, ট, ণ, ন, ম এবং ল’-এর সঙ্গে ম যুক্ত হলে, সে ম উচ্চারিত হয়। যেমন : যুগ্ম (জুগ্মো), বাগ্মী (বাগ্মি),
চিন্ময় (চিন্ময়্), বাল্মীকি (বাল্মিকি) ইত্যাদি।
৪। সংযুক্ত ব্যঞ্জনের সঙ্গে যুক্ত ম-ফলা উচ্চারিত হয় না, তবে সংযুক্ত ব্যঞ্জনে যুক্ত স্বরধ্বনিটি আনুনাসিক উচ্চারিত হয়। যেমন : সূক্ষ্ম (সুক্খোঁ),
লক্ষ্মী ( লোক্খিঁ ) ইত্যাদি।
৫। বাংলায় কতিপয় ম-ফলা যুক্ত সংস্কৃত শব্দ আছে, যাদের ম-ফলা উচ্চারিত হয়। যেমন : কুষ্মাণ্ড (কুশ্মান্ডো), সুস্মিতা (শুশ্মিতা), স্মিত (স্মিতো) ইত্যাদি।
প্রশ্ন ৫ : উদাহরণসহ প্রমিত বাংলায় অন্ত্য 'অ' উচ্চারণের ৫টি নিয়ম লেখ। অথবা, স্বরধ্বনি উচ্চারণের ৫টি নিয়ম লেখ।
উত্তর: নিচে অন্ত্য 'অ' উচ্চারণের নিয়ম আলোচনা করা হলো:
১। বাংলায় শব্দের অন্ত্য অ-কার অনেক ক্ষেত্রে অনুচ্চারিত থাকে এবং শেষ বর্ণটি হসন্ত রূপে উচ্চারিত হয়। যেমন : হাত (হাত্), কাল (কাল্), মান (মান্)।
২। বাংলায় কতিপয় বিশেষণ অথবা বিশেষণরূপে ব্যবহৃত পদের অন্ত্যে থাকা অ-কার সাধারণত ও-কার রূপে উচ্চারিত হয়। যেমন: কাল
(কালো), ভাল (ভালো), যত (যতো), হেন (হ্যানো)।
৩। আন (আনো) প্রত্যয়ান্ত শব্দের অন্ত্য-অ ও-কারের মতো উচ্চারিত হয়। যেমন: পাঠান (পাঠানো), করান (করানো), দেখান (দ্যাখানো)।
৪। সংখ্যাবাচক শব্দের অন্ত্য-অ রক্ষিত এবং ও-কার রূপে উচ্চারিত হয়। যেমন : এগার (এ্যাগারো), ঘোল ( শোলো ), চৌদ্দ (চোউদ্দো),
সতের (শতেরো)।
৫। বাংলায় দ্বিরুক্ত বিশেষণে ও অনুকার শব্দে অন্ত্য অ-কার ও-কার রূপে উচ্চারিত হয়। যেমন: পড়-পড় (পড়ো-পড়ো), কাঁদ-কাঁদ (কঁদো
কঁদো), ছল-ছল (ছলো-ছলো)।
৬। ‘ত’ এবং ‘ইত' প্রত্যয়ান্ত বিশেষণ পদের অন্য অ-কার ও-কার রূপে উচ্চারিত হয়। যেমন : গত (গতো), রক্ষিত ( রোক্খিতো), পরীক্ষিত
(পোরিক্খিতো)।
৭। ই-কার এবং এ-কারের পরে ‘য় এলে সেই য়’-এর অ-কার ও-কার রূপে উচ্চারিত হয়। যেমন : প্রিয় (প্রিয়ো), স্মরণীয় (শঁরোনিয়ো),
বরণীয় (বরোনিয়ো)।
৮। বিশেষ্য পদের শেষ অক্ষরে ‘হ’ থাকলে অন্ত্য-অ-কার ও-কার রূপে উচ্চারিত হয়। যেমন: কলহ (কললো), বিরহ (বিরহো)।
৯। বিশেষণ পদের শেষ অক্ষরে ঢ় থাকলে অন্ত্য-অ-কার ও-কার রূপে উচ্চারিত হয়। যেমনঃ গুঢ় (গুঢ়ো), মূঢ় (মুঢ়ো)।
১০। শব্দের অন্ত্য অক্ষরে সংযুক্ত ব্যঞ্জনবর্ণ থাকলে অন্ত্য অ-কার ও-কার রূপে উচ্চারিত হয়। যেমন : ভক্ত (ভক্তো), শক্ত (শক্তো), ঐতিহ্য (ওইতিজ্ঝো), চিহ্ন (চিন্হো), যত্র (জত্ত্রো)।।
১১। শব্দের অন্ত্য অ-এর আগে ÔsÕ ÔtÕ থাকলে অন্ত্য অ-কার ও-কার রূপে উচ্চারিত হয়। যেমন : বংশ (বঙ্শো), বিংশ (বিঙ্শো), দুঃখ (দুক্খো)।
১২। শব্দের অন্ত্য অ-এর আগে ‘ঐ’, ‘ঔ’ এবং ঋ-কার থাকলে অন্ত অ-কার ও-কার রূপে উচ্চারিত হয়। যেমন : দৈব ( দোইবো ), গৌণ (গোউনো), তৃণ (তৃনো), লৌহ (লোউহো)।
১৩। ‘তর’, ‘তম’ প্রত্যয়যুক্ত বিশেষণ পদের অন্ত্য অ-কার ও-কার উচ্চারিত হয়। যেমন : ভিন্নতর (ভিন্নোতরো), উচ্চতম (উচ্চোতমো),
বৃহত্তর (বৃহত্তরো)।
প্রশ্ন ৬: উদাহরণসহ প্রমিত বাংলায় ‘এ’-কার উচ্চারণের ৫টি নিয়ম লেখ। (সি.বো. ১৬,১৭, ২৩, কুবো-২৩ রাবি-২০১৯, ববো-২২ মবো-২২ দিবো -২২)
উত্তর: বাংলায় ‘এ’ বর্ণের লিখিত রূপ একটি হলেও এর উচ্চারিত রূপ দুটি। এর একটি হলো সোজা বা সরল উচ্চারণ এবং অন্যটি হলো বাঁকা বা বিকৃত উচ্চারণ। প্রথমটির উদাহরণ হলো- দেহ ( দেহো ), বেশ ( বেশ ) ইত্যাদি। দ্বিতীয়টির উদাহরণ হলো- এক (এ্যাক), ক্ষেপা (খ্যাপা) ইত্যাদি। বিভিন্ন ধ্বনিতাত্ত্বিক পরিবেশে ‘এ’ উচ্চারণের বিভিন্ন নিয়ম আলোচনা করা হলো:
১। বাংলায় তৎসম শব্দের শুরুতে বা প্রথমে এ-কার সোজা বা অবিকৃতভাবে এ-রূপে উচ্চারিত হয়। যেমন:একান্তর (একান্তর্), বেদ ( বেদ্ ), কেন্দ্র (কেন্দ্রো)।
২। শব্দের শুরুতে বা প্রথমে যদি ‘এ’-থাকে এবং ‘এ’-এর পরে যদি ই, ঈ, উ, ঊ, এ, ও, য়, র, ল, শ কিংবা হ থাকে তবে ‘এ’ সোজা বা অবিকৃতভাবে উচ্চারিত হয়। যেমন: একীভূত (একিভুতো), একুশ (একুশ), কেহ ( কেহো)।
৩। একাক্ষরিক সর্বনাম পদের এ-কার সাধারণত সোজা বা অবিকৃতভাবে উচ্চারিত হয়। যেমন: সে ( শে ), কে ( কে ), যে ( জে )।
৪। মূলে ই-কার যুক্ত ধাতুর সঙ্গে আ-কার যুক্ত হলে সে ই-কার অবিকৃত এ-কার রূপে উচ্চারিত হয়। যেমন: শিখ + আ > শেখা (শেখা), কিন্ + আ > কেনা ( কেনা ), লিখ্ + আ > লেখা ( লেখা )।
৫। শব্দের শুরুতে বা প্রথমে এ-কারের পরে অ বা আ থাকলে এ-কার সাধারণত বাঁকা বা এ্যা-কার রূপে উচ্চারিত হয়। যেমন: এখন (এ্যাখোন্), একা ( এ্যাকা ), যেমন ( জ্যামোন্ )।।
৬। শব্দের শুরুতে বা প্রথমে এ-কারযুক্ত একাক্ষরিক ধাতুর পরে আ-প্রত্যয় যুক্ত হলে সেই এ-কার সাধারণত বাঁকা বা এ্যা-কার রূপে উচ্চারিত হয়। যেমন: বেচ্ + আ = বেচা (ব্যাচা), ক্ষেপ্ + আ = ক্ষেপা (খ্যাপা), খেল্ + আ = খেলা (খ্যালা ) ইত্যাদি।
| 
			 
  | 
		
৭। কোনো শব্দের আদ্য এ-কারের পরে যদি ং, ঙ, ঙ্গ থাকে এবং এই তিনটি বর্ণের পরে যদি ই, ঈ, উ, ঊ থাকে, তবে সে ক্ষেত্রে এ-কার, বাঁকা বা এ্যা-কার রূপে উচ্চারিত হয়। যেমন: বেঙ (ব্যাঙ্), বেঙ্গমা (ব্যাঙ্গোমা) ইত্যাদি।
প্রশ্ন ৭: মধ্য ‘অ’ উচ্চারণের ৫টি নিয়ম লেখ। অথবা, স্বরধ্বনি উচ্চারণের ৫টি নিয়ম লেখ।
উত্তর: নিচে মধ্য 'অ'-এর ৫টি নিয়ম আলোচনা করা হলো:
১। শব্দের মধ্যে থাকা ব্যঞ্জনে যুক্ত অ-এর পরে ই, ঈ, উ, ঊ, ঋ-কার এবং য-ফলা থাকলে উক্ত অ-কার সাধারণত ও-কারের মতো উচ্চারিত
হয়। যেমন : অদম্য (অদোম্মো), কাকলি (কাকোলি), অমসৃণ (অমোস্সৃন্), জননী (জনোনি)।
২। শব্দের মধ্যে থাকা ব্যঞ্জনে যুক্ত অ-এর পরে ‘ক্ষ’ থাকলে উক্ত অ-কার ও-কারের মতো উচ্চারত হয়। যেমন : সুদক্ষ (শুদোক্খো), অবক্ষয়
(অবোক্খয়্) ইত্যাদি।
৩। শব্দের মধ্যে থাকা ব্যঞ্জনে যুক্ত অ-এর পরে ‘জ্ঞ’ থাকলে উক্ত ‘অকার ‘ও’ কারের মতো উচ্চারিত হয়। যেমন : দৈবজ্ঞ (দোইবোগ্গোঁ),
সর্পযজ্ঞ (শর্পোজোগ্গোঁ) ইত্যাদি।
৪। তিন বা তার অধিক বর্ণে গঠিত শব্দের মধ্যস্থিত অ-কারের আগে অ, আ, এ অথবা ও-কার থাকলে ঐ মধ্য-অ ও ও-কারের মতো উচ্চারিত হয়। যেমন: রতন (রতোন্), কাজল (কাজোল্), কোমল ( কোমোল্ )। ব্যতিক্রম : এরূপ ক্ষেত্রে আদ্য-অ যদি না-বোধক এবং স যদি সাথে অর্থে ব্যবহৃত হয়, তবে অ অবিকৃত থাকবে। যেমন : অমল (অমল্),
সজল (সজল্), সলজ্জ (শলজ্জো)।
৫। বাংলায় কতিপয় সমাসবদ্ধ তৎসম শব্দের মধ্য-অ ও-কার রূপে উচ্চারিত হয়। যেমন : পথচারী (পথোচারি), দীনবন্ধু (দিনোবোন্ধু),
রণতূর্য (রনোতুর্জো)।
প্রমিত উচ্চারণের ক্ষেত্রে নিচের বিষয়গুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এগুলো আয়ত্ত করার চেষ্টা করো।
প্রমিত উচ্চারণে কোন্ ধ্বনি কোন্ ধ্বনিতে পরিণত হয় তা নিচে দেখানো হলো:
| 
			 
  | 
			
			 বানান  | 
			
			 
  | 
			
			 উচ্চারণ  | 
			
			 মন্তব্য  | 
			
			 
  | 
		
| 
			 বানানে যদি থাকে :  | 
			
			 অ’  | 
			
			 তবে উচ্চারণে হবে:  | 
			
			 ‘ও’ ো  | 
			
			 সূত্র অনুযায়ী  | 
			
			 অতি>ওতি  | 
		
| 
			 বানানে যদি থাকে :  | 
			
			 ঈ  | 
			
			 তবে উচ্চারণে হবে:  | 
			
			 ই  | 
			
			 নিশ্চিত পরিবর্তন  | 
			
			 নঈ>নোই  | 
		
| 
			 বানানে যদি থাকে :  | 
			
			 ী  | 
			
			 তবে উচ্চারণে হবে:  | 
			
			 ি  | 
			
			 ঐ  | 
			
			 নদী>নোদি  | 
		
| 
			 বানানে যদি থাকে :  | 
			
			 ঊ  | 
			
			 তবে উচ্চারণে হবে:  | 
			
			 উ  | 
			
			 ঐ  | 
			
			 ঊর্ধ্ব> উর্ধো  | 
		
| 
			 বানানে যদি থাকে :  | 
			
			 ূ  | 
			
			 তবে উচ্চারণে হবে:  | 
			
			 ু  | 
			
			 ঐ  | 
			
			 বধূ>বোধু  | 
		
| 
			 বানানে যদি থাকে :  | 
			
			 ঋ  | 
			
			 তবে উচ্চারণে হবে:  | 
			
			 রি  | 
			
			 শব্দের শুরুতে ‘রি’  | 
			
			 ঋতু>রিতু,  | 
		
| 
			 বানানে যদি থাকে :  | 
			
			 ৃ  | 
			
			 তবে উচ্চারণে হবে:  | 
			
			 ৃ  | 
			
			 শব্দের মধ্যে ‘ৃ’  | 
			
			 মসৃণ>মোস্সৃন্  | 
		
| 
			 বানানে যদি থাকে :  | 
			
			 এ  | 
			
			 তবে উচ্চারণে হবে:  | 
			
			 এ অথবা এ্যা  | 
			
			 সূত্র অনুযায়ী  | 
			
			 এক>এ্যাক্  | 
		
| 
			 বানানে যদি থাকে :  | 
			
			 ঐ  | 
			
			 তবে উচ্চারণে হবে:  | 
			
			 ওই  | 
			
			 নিশ্চিত পরিবর্তন  | 
			
			 কৈ>কোই  | 
		
| 
			 বানানে যদি থাকে :  | 
			
			 ঔ  | 
			
			 তবে উচ্চারণে হবে:  | 
			
			 ওউ  | 
			
			 ঐ  | 
			
			 ঔষধ> ওউশধ্  | 
		
| 
			 বানানে যদি থাকে :  | 
			
			 ং  | 
			
			 তবে উচ্চারণে হবে:  | 
			
			 ঙ  | 
			
			 ঐ  | 
			
			 মাংস>মাঙ্শো  | 
		
| 
			 বানানে যদি থাকে :  | 
			
			 ঞ  | 
			
			 তবে উচ্চারণে হবে:  | 
			
			 ‘য়ঁ’ বা ‘ন’  | 
			
			 সূত্র অনুযায়ী  | 
			
			 মিয়াঁ, অন্চল  | 
		
| 
			 বানানে যদি থাকে :  | 
			
			 ণ  | 
			
			 তবে উচ্চারণে হবে:  | 
			
			 ন  | 
			
			 নিশ্চিত পরিবর্তন  | 
			
			 রণ>রন্  | 
		
| 
			 বানানে যদি থাকে :  | 
			
			 ব  | 
			
			 তবে উচ্চারণে হবে:  | 
			
			 ‘০’ অথবা ‘দ্বিত্ব’  | 
			
			 সূত্র অনুযায়ী  | 
			
			 স্বামী>শামি, দিত্তো  | 
		
| 
			 বানানে যদি থাকে :  | 
			
			 ম  | 
			
			 তবে উচ্চারণে হবে:  | 
			
			 ‘০’ অথবা ‘দ্বিত্ব’  | 
			
			 সূত্র অনুযায়ী  | 
			
			 স্মৃতি>সৃঁতি, পদ্দাঁ  | 
		
| 
			 বানানে যদি থাকে :  | 
			
			 য  | 
			
			 তবে উচ্চারণে হবে:  | 
			
			 জ  | 
			
			 নিশ্চিত পরিবর্তন  | 
			
			 যখন> জখোন্  | 
		
| 
			 বানানে যদি থাকে :  | 
			
			 শ  | 
			
			 তবে উচ্চারণে হবে:  | 
			
			 স  | 
			
			 সব সময় নয়  | 
			
			 সাহস>শাহোশ্  | 
		
| 
			 বানানে যদি থাকে :  | 
			
			 স  | 
			
			 তবে উচ্চারণে হবে:  | 
			
			 শ  | 
			
			 সব সময় নয়  | 
			
			 শ্রাবণ>স্রাবোন্  | 
		
| 
			 বানানে যদি থাকে :  | 
			
			 ষ  | 
			
			 তবে উচ্চারণে হবে:  | 
			
			 শ  | 
			
			 নিশ্চিত পরিবর্তন  | 
			
			 পরিষ্কার>পোরিশ্কার  | 
		
| 
			 বানানে যদি থাকে :  | 
			
			 ঃ (শব্দের মধ্যে)  | 
			
			 তবে উচ্চারণে হবে:  | 
			
			 দ্বিত্ব (সংশ্লিষ্ট বর্ণ)  | 
			
			 নিশ্চিত পরিবর্তন  | 
			
			 নিঃশেষ>নিশ্শেশ্  | 
		
| 
			 বানানে যদি থাকে :  | 
			
			 ঃ (শব্দের শেষে)  | 
			
			 তবে উচ্চারণে হবে:  | 
			
			 ও এরে মতো  | 
			
			 নিশ্চিত পরিবর্তন  | 
			
			 পুনঃ>পুনো  | 
		
| 
			 বানানে যদি থাকে :  | 
			
			 য-ফলা Ô ¨ Õ  | 
			
			 তবে উচ্চারণে হবে:  | 
			
			 দ্বিত্ব (সংশ্লিষ্ট বর্ণ)  | 
			
			 ঐ  | 
			
			 অদ্য>ওদ্দো  | 
		
| 
			 বানানে যদি থাকে :  | 
			
			 হ্য  | 
			
			 তবে উচ্চারণে হবে:  | 
			
			 জ্ঝো  | 
			
			 ঐ  | 
			
			 গ্রাহ্য>গ্রাজ্ঝো  | 
		
নিচের বাক্যটি মুখস্থ করলে বা মনে রাখলে ‘অ’ উচ্চারণের ২৭টি নিয়ম মনে রাখা সম্ভব।
অ-এর পর যদি:
ই, ই-কার (ি), ঈ, ঈ-কার (ী), উ, উ-কার (ু), উ, ঊ-কার( ূ ) ঋ, ঋ-কার (ৃ) ক্ষ, জ্ঞ, য-ফলা (‘য্য)) র-ফলা ( ª ) থাকে তবে অ ও-এর মতো (সংবৃত) উচ্চারিত হয়। যেমন: সই > শোই, অতি > ওতি, নঈ >নোই, নদী > নোদি, গরু > গোরু, মসৃণ > মোস্সৃন্, অক্ষ > ওক্খো, যজ্ঞ > জোগ্গোঁ, শ্রম > স্রোম্ ইত্যাদি।
উচ্চারণ নির্ণয়ের জন্য নিচের টিপস বা কৌশলগুলো মনে রাখবে:
১। যুক্ত বর্ণের দ্বিতীয় বর্ণে সাধারণত ও-কার হয়। যেমন : অক্ষ > ওক্খো, যজ্ঞ > জোগ্গোঁ ইত্যাদি।
২। নাসিক্য (ন, ঞ, ম) ধ্বনি লুপ্ত হলে তার স্থলে চন্দ্রবিন্দু হবে। যেমন: যজ্ঞ > জোগ্গোঁ, স্মৃতি> সৃঁতি ইত্যাদি
৩। একাক্ষরিক শব্দের প্রথম ধ্বনি/বর্ণে সাধারণত ও-কার হবে। যেমন: বন > বোন্, মন > মোন্, গণ > গোন্ ইত্যাদি।
৪! বিসর্গের পর সংশ্লিষ্ট ধ্বনি বা বর্ণ দ্বিত্ব হয়। যেমন: দুঃসাহস > দুশ্শাহোশ্, দুঃখ> দুক্খো।
৫। নেতিবাচক বা না-সূচক অ-এর উচ্চারণ স্বাভাবিক উচ্চারণ হবে ( অ অ-এর মতোই থাকবে)। যেমন: অবিনাশ > অবিনাশ, অসীম > অশিম্ ইত্যাদি।
-০-
মুসা স্যার, বাংলা
| 
			 বাংলায় এ+ নিশ্চিত করতে আজই সংগ্রহ কর: মুসা স্যারের ‘বাংলা ১ম পত্র ও ২য় পত্রের সাজেশন ও সমাধান’  | 
		
                                    +88 01713 211 910